সুপার শপের পাশাপাশি আগামী ১ নভেম্বর থেকে কাঁচাবাজারেও পলিথিন আর অপচনশীল প্রোপাইলিন জাতীয় দ্রব্য ব্যবহার বন্ধের কথা জানিয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টাউন হল কাঁচাবাজারে বণিক সমিতির অফিসে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা জানান।
এর আগে পলিথিন শপিং ব্যাগ, পলিইথিলিন বা পলিপ্রপাইলিন তৈরির সামগ্রীর ওপর বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে টাউন হল কাঁচাবাজারে ক্লিন-আপ কার্যক্রম উদ্বোধন ও বাজারে পলিথিনের বিকল্প সামগ্রী বিতরণ, বাজারে বিদ্যমান পলিথিন ব্যাগসহ অন্যান্য পলিথিনজাত প্যাকেজিং সংগ্রহের জন্য বিন ও স্থায়ী নোটিশ বোর্ড স্থাপন কাজের উদ্বোধন করেন পরিবেশ উপদেষ্টা।
মতবিনিময় সভায় পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, কাঁচাবাজারগুলো যাতে আর পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার না করে, সেজন্য আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। এটা নতুন করে নিষেধ করার কিছু নেই। এটা ২০০২ সাল থেকে আইন করে নিষিদ্ধ করা আছে। ২০০৪-২০০৬ সাল পর্যন্ত সফলভাবেই প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল। পলিথিন উৎপাদনকারী বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে অভিযান চালানো হয়েছিল। কিন্তু মার্কেটে কখনো অভিযান চালানো হয়নি। ফলে মার্কেটগুলো দেদারসে পলিথিন এনেছে এবং পলিথিনে পণ্য দিয়েছে।
তিনি বলেন, পলিথিন ব্যাগগুলো রিসাইকেল করা যায়, কিন্তু সেটা সন্তোষজনক নয়। কারণ পলিথিন ব্যাগ বা অন্যান্য সামগ্রী থেকে মানুষের রক্তে. মস্তিষ্কে, লিভারে পলিথিনের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। বাংলাদেশে পলিথিন দিয়ে মোড়ক করার কারণে লবণের মধ্যে পর্যন্ত মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের অনেক নদীর মাছের মধ্যে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া যাচ্ছে। কাজেই প্লাস্টিক ব্যবহার করাই একটা ক্ষতিকারক বিষয়। সুতরাং এটাকে কালেক্ট করে রিসাইকেল হচ্ছে সর্বশেষ সমাধান, যেখানে আর কোনো বিকল্প থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, আগামী ১ অক্টোবর থেকে ঢাকার সুপারশপগুলোতে প্লাস্টিক ও পলিপ্রপাইলিনের ব্যাগ আর ব্যবহার করা যাবে না। এটা সরকারের একক কোনো সিদ্ধান্ত নয়। এটি সুপারশপগুলোর ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর বিকল্প হিসেবে পাট, কাপড় ও কাগজের ব্যাগ ব্যবহার করতে হবে। এজন্য বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনসহ ২০-২৫টি প্রতিষ্ঠান পাট, কাপড় ও কাগজের ব্যাগ তাদের সরবরাহ করবে। এরই মধ্যে সুপারশপগুলো তাদের চাহিদা দিয়েছে এবং তাদের চাহিদা অনুযায়ী ব্যাগের যোগানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, সুপারশপের পাশাপাশি আমরা আগামী ১ নভেম্বর কাঁচাবাজারগুলোতে পলিথিন ও পলিপ্রপাইলিনের ব্যাগ ব্যবহার বন্ধে কার্যক্রম শুরু করব। সেটি আজকের মতো আলাপ-আলোচনা নয়, আইন প্রয়োগ করা হবে। দোকান-মালিক সমিতির নেতারাও আমাদের কথা দিয়েছেন, এক মাসের মধ্যে তারা পলিথিনের পরিবর্তে পাট, কাপড় বা কাগজের ব্যাগ ব্যবহার শুরু করবেন।
তিনি আরও বলেন, পলিথিন বা পলিপ্রপাইলিনের ব্যাগ ব্যবহারে যে নিষেধাজ্ঞা আছে, সেটি কার্যকর করতে আগামী ১ অক্টোবর সুপারশপে এবং ১ নভেম্বর কাঁচাবাজারগুলোতে কাজ শুরু করতে যাচ্ছি। একই সঙ্গে পলিথিন যেখানে উৎপাদন করা হয়, ১ নভেম্বর থেকে সেখানে আমরা আমাদের অভিযান চালাব। সবাই পর্যাপ্ত সময় পাচ্ছেন। আমরাও বিকল্প সরবরাহের জন্য কাজ করছি।
এমএএন
মন্তব্য করুন: