শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা অর্জন করল। এই স্বাধিনতা আমাদেরকে রক্ষা করতেই হবে। এই স্বাধীনতার সুফল ঘরে ঘরে পৌছে দিতে হবে। স্বাধীনতার অর্থ হলো সবার পরিবর্তন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দুপুর পৌনে ৩টায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, আজকে আমার গৌরবের দিন। যে বিপ্লবের মাধ্যমে বাংলাদেশ আজকে নতুন বিজয় নিশ্চিত করলাম, সেটাকে সামনে রেখে এগিয়ে যেতে হবে। যারা এটা সম্ভব করেছে তরুন সমাজ তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। এরা এদেশকে রক্ষা করছে, দেশকে নতুন করে পুন জন্ম দিয়েছে। এই পুর্নজন্মের মাধ্যমে আমরা যে বাংলাদেশ পেয়েছি। তা দ্রুত গতিতে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।
তিনি বলেন, আন্দেলনের নিহত আবু সাইদের কথা মনে পড়ছে । তার ছবি বাংলাদেশের মানুষের মনে গেথে আছে। এটা মানুষ ভুলবে না। কি অবিশ্বাষ্য একটা সাহসী যুবক বন্দুকের সামনে দাড়িয়ে আছে। যত গুলি চাও মারতে পারো এ কারনে সারা দেশ জুড়ে এই আন্দোলন ছড়িয়ে গেছে।
ড. ইউনূস বলেন, এই দেশ তরুন সমাজের । তোমরা তোমাদের মনের মতো গড়তে পারবে। তোমাদের দেখে মানুষ শিখবে কিভাবে দেশ গড়তে হয়। পুরনোদের বাদ দাও তাদের পুরনো চিন্তা দিয়ে আমাদের মুক্তি হবে না। তরুনদের শৃজনশীলতা আছে, সেটাকে কাজে লাগাতে হবে। তরুনরা যেই স্বাধীনতা অর্জন করেছে তাদেরকে দিয়ে দেশটাকে গড়তে হবে। সমস্ত কাঠামো পরিস্কার করতে হবে। সরকার বলে একটা কিছু আছে কিন্তু মানুষের কোনো আস্থা নেই। এটা দমন পিড়নের একটা যন্ত্র। এটা সরকার হতে পারে না। আমাদের সরকার আমাদের রক্ষা করবে, আস্থার যায়গা হবে।
তিনি আরো বলেন, পুরো বাংলাদেশ একটা পরিবার। আমাদের মদ্যে যে দ্বিধা দ্বন্ধ সরিয়ে ফেলতে চাই। যাতে এক সাথে কাজ করতে পারি।
চলমান সহিংসতার বিষয়ে তিনি বলেন, দেশে আসার সময় সহিংসতার খবর পেলাম। আইন শৃঙ্কলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। মানুষ মানুষকে আক্রমন করছে। অফিস আদালত, সংখ্যা লঘুদের উপর আক্রমন করছে। এগুলো ষড়যন্ত্রের অংশ। এটা বন্ধ করতে হবে। আমাদের প্রথম কাজ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করা।
তিনি বলেন, আপনারা আমার উপর আস্থা রেখে আহ্বান জানিয়েছেন। আমি সাড়া দিয়েছি। আপনারা আমার উপর বিশ্বাষ রাখলে নিশ্চিত করুন কারো উপর হামলা হবে না। আপনারা সহিংসতা থেকে দেশকে রক্ষা করুন। আমার কথা না শুনলে এখানে আমার প্রয়োজন নেই। আমাকে বিদায় দেন, আমি আমার কাজে ব্যস্ত হয়ে যাবো। না হলে আমার কথা শুনতে হবে।
তিনি বলেন, তরুনদের নির্দেশেই আমারা দেশ চালাবো। এখানে সেনাবাহীনি, বিমান বাহিনী, নৌবাহীনিসহ সুশিল সমাজের যারা উপস্থিত আছেন তারা সবাই একটা পরিবার। আমরা যেন একযোগে চলতে পারি এবং তড়িৎ গতিতে একটা সুন্দর বাংলাদেশ গড়েতে পারি। আমাদের দ্রুত গতিতে এগিয়ে যেতে হবে।
অধ্যাপক ইউনূস সাহসী শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এরা ‘আমাদের দ্বিতীয় বিজয় দিবস’ সম্ভব করার জন্য নেতৃত্ব দিয়েছেন। এ আন্দোলনে সর্বাত্মক সমর্থন দেওয়ার জন্য তিনি জনগণকেও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
এমএএন
মন্তব্য করুন: