ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর চামড়ার নতুন দাম নির্ধারণ করেছে সরকার। এবার কোরবানির পশুর লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম গতবছরের চেয়ে পাঁচ টাকা বাড়ানো হয়েছে।
আর খাসি চামড়ার পাঁচ টাকা ও বকরির চামড়ার দাম ছয় টাকা বাড়িয়েছে।
সোমবার (৩ জুন) দুপুরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘কাঁচা চামড়ার মূল্য নির্ধারণ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনাবিষয়ক’ সভা শেষে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুর উপস্থিতিতে এবারের চামড়ার নতুন দাম ঘোষণা করা হয়।
এ সময় বাণিজ্য সচিব মোহা. সেলিম উদ্দিনসহ সংশ্লিষ্টমন্ত্রণালয় ও ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন বলেন, ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম ৫৫ থেকে ৬০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আর খাসির লবণযুক্ত চামড়ার দাম ২০ থেকে ২৫ টাকা এবং বকরির চামড়া ১৮ থেকে ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকায় গরুর চামড়া প্রতি পিস ১২০০ টাকার নিচে কেনা হবে না এবং ঢাকার বাইরের চামড়া এক হাজারের নিচে কেনা হবে না।
এ সময় মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন চামড়া সঠিকভাবে সংরক্ষণ করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, এবার গরম পড়েছে বেশি। তাই অতিরিক্ত গরমের পশুর চামড়া নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এজন্য চামড়া ছাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে লবণ দেবেন।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইটিপি প্ল্যান নিয়েছি সেটা হয়ে যাবে। বেসরকারিখাতেও ইটিপি তৈরি করা হচ্ছে। চামড়া হচ্ছে জাতীয় সম্পদ। সেটা যাতে কোনোভাবে নষ্ট না হয়। আমরা বা সরকার পলিসি মেকার। ট্যানারি মালিকরা যদি একটি মূল্য নির্ধারণ করে দেন তাহলে ভালো হয়। চামড়া সংরক্ষণের ওপর দাম নির্ভর করে। এবছর কোরবানিতে আমাদের এক কোটি সাত লাখ পশুর চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ আছে এক কোটি ২৯ লাখ পশু। এরমধ্যে ৫৫ লাখ গরু, মহিষ এবং বাকিগুলো উট, ছাগল, ভেড়াসহ অন্যান্য প্রাণী। এবছর আমরা শতভাগ চামড়া সংরক্ষণের চেষ্টা করব।
গতবছর ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম ৫০ থেকে ৫৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর খাসির লবণযুক্ত চামড়ার দাম ১৮ থেকে ২০ টাকা এবং বকরির চামড়া ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তার আগের বছর (২০২২) ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম ৪৭ থেকে ৫২ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৪০ থেকে ৪৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর খাসির লবণযুক্ত চামড়ার দাম ১৮ থেকে ২০ টাকা এবং বকরির চামড়া ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগের বছর (২০২১) ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ছিল ৩৩ থেকে ৩৭ টাকা। খাসির লবণযুক্ত চামড়ার দাম ছিল প্রতি বর্গফুট ১৫ থেকে ১৭ টাকা এবং বকরির চামড়া ছিল ১২ থেকে ১৪ টাকা বর্গফুট।
উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর ধরে সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া বেচাকেনা হচ্ছে না। সিন্ডিকেটের কারণে পানির দরে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এবারও সেই সিন্ডিকেটের ইচ্ছাতেই চামড়া বাজার চলবে কি না সে বিষয়ে কোনো কিছু বলেননি প্রতিমন্ত্রী।
এসআর
মন্তব্য করুন: