রোববার (১৪ জুলাই) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ ২৭ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন।
পূর্ণাঙ্গ রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, ২০১২ সালে করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দেওয়া রায় ও আদেশ, ২০১৩ সালের লিভ টু আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের তা বহাল ও সংশোধিত আদেশ এবং ২০১১ সালের ১৬ জানুয়ারির অফিস আদেশের (মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনির কোটা) আলোকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান/নাতি-নাতনিদের জন্য কোটা পুনর্বহাল করতে সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হলো। একইসঙ্গে জেলা, নারী, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, উপজাতি-ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য কোটাসহ, যদি অন্যান্য থাকে, কোটা বজায় রাখতে নির্দেশ দেওয়া হলো। এ বিষয়ে যত দ্রুত সম্ভব, আদেশ পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে পরিপত্র জারি করতে নির্দেশ দেওয়া হলো।
রায়ে বলা হয়েছে, প্রয়োজনে উল্লিখিত শ্রেণির ক্ষেত্রে কোটা পরিবর্তন ও হার কমানো বা বাড়ানোর বিষয়ে এ রায় বিবাদীদের জন্য কোনো বাধা তৈরি করবে না। যেকোনো পাবলিক পরীক্ষায় কোটা পূরণ না হলে সাধারণ মেধাতালিকা থেকে শূন্য পদ পূরণ করায় সরকারের স্বাধীনতা রয়েছে।
এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, '২০১২ সালে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চের রায় ছিল। সেই রায় ২০১৩ সালে আপিল বিভাগ বহাল রেখেছে। কোটা নিয়ে হাইকোর্ট যে পূর্ণাঙ্গ রায় রবিবার (আজ) প্রকাশ করেছে, হাইকোর্টে সেখানে বলেছে, আপিল বিভাগের ২০১৩ সালের রায়ের ওপর ভিত্তি করে কোটা পুনর্বহাল করে রায় দিয়েছি। সেটি অনুসরণ বাধ্যতামূলক।'
তিনি আরও বলেন, আবার হাইকোর্ট রবিবার প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলেছেন, সরকার চাইলে কোটা পুনঃনির্ধারণ করতে পারে। এটি হাইকোর্টের নিজস্ব পর্যবেক্ষণ।
গত ৫ জুন সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এরপর ৯ জুন হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। চেম্বার আদালত ওইদিন এ আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন ।
কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকবে নাকি বাতিল হবে– এবিষয়ে আপিল বিভাগই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বলে সেদিন জানিয়েছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে সরাসরি নিয়োগে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি তুলে দিয়ে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
তবে বুধবার (১০ জুলাই) আপিল বিভাগ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া হাইকোর্টের এ রায়ের ওপর চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা জারি করায় ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল থাকছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আপিল বিভাগের চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থার মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করতে বলেছেন আদালত। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য ৭ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন: